Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

কার্যাবলী

স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন ২০০৯ এর ৪৭ ধারায় সরকার ইউনিয়ন পরিষদের অধীনে নিম্নোক্ত দায়িত্ব ও কার্যাবলী অর্পণ করেছেন।

 
1. পাঁচশালা ও বিভিন্ন মেয়াদী উন্নয়ন পরিকল্পনা তৈরী ।
2. পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন, সংরক্ষন ও রক্ষনাবেক্ষণ ।
3. শিক্ষা এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা কার্যক্রম সম্পর্কিত ।
4. স্বাস্থ্য,পরিবার পরিকল্পনা সম্পর্কিত কার্যক্রম বাস্তবায়ন ।
5. কৃষি,মৎস্য ও পশু সম্পদ ও অন্যাণ্য অথনৈতিক উন্নয়নে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহন ।
6. মহামারী নিয়ন্ত্রণ ও দুযোর্গ ব্যবস্থাপনায় প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ ।
7. কর, ফি, টোল, ফিস, ইত্যাইদ ধার্যকরণ ও আদায় ।
8. পারিবারিক বিরোধ নিরসন নারী ও শিশু কল্যাণ সম্পর্কিত প্রয়োজনীয় কার্যক্রম সম্পাদন।
9. খেলাধুলা,সামাজিক উন্নতি সংস্কৃতি ইত্যাদি কার্যক্রম প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ ও সহায়তা করা।
10. পরিবেশ উন্নয়ন ও সংরক্ষণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ ।
11. আইন শৃংখলা রক্ষায় সরকারের অর্পিত দায়িত্ব পালন ও প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ ।
12. জন্ম মৃত্যু নিবন্ধকরণ ।
13. সরকারি স্থান,উন্মুক্ত জায়গা ,উদ্যান, ও খেলার মাঠের হেফাজত করা ।
14. ইউনিয়ন পরিষদের রাস্তায়  ও সরকারি স্থানে বাতি জ্বালানো ।
15. বৃক্ষরোপণ ও সংরক্ষন এবং বৃক্ষসম্পদ চুরি ও ধ্বংস প্রতিরোধ ।
16. কবরস্থান,শ্মশান,জনসাধারণের সভার স্থান ও অন্যান্য সরকারি সম্পত্তির রক্ষনাবেক্ষণ ও   পরিচালনা ।
17. জনপথ,রাজপথ ওসরকারি স্থানে অনধিকার প্রবেশ রোধ এবং এইসব স্থানে উৎপাত ও তাহার কারণ বন্ধ করা ।
18. জনপথ ও রাজপথ ক্ষতি ,বিনষ্ট বা ধ্বংস প্রতিরোধ করা ।
19. গোবর ও রাস্তার আর্বজনা সংগ্রহ,অপসারণ বাবস্থাপনা নিশ্চিত করা ।
20. অপরাধমূলক ও বিপজ্জনক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ ।
21. মৃত পশুর দেহ অপসারণ ও নিয়ন্ত্রণ এবং পমু জবাই নিয়ন্ত্রণ ।
22. ইউনিয়নে নতুন বাড়ি ,দালান নির্মাণ ও পুন:নির্মাণ এবঙং বিপজ্জনক দালান নিয়ন্ত্রণ ।
23. কুয়া,পানি তোলার কল,জলাধার,পুকুর,এবং পানি সরবরাহের অন্যান্য উৎসের ব্যবস্থাপনা ও সংরক্ষণ ।
24. খাবার পানির উৎসের দূষণ রোধ এবং জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর সন্দেহযুক্ত কূপ,পুকুর বা পানি সরবরাহের অন্যান্য স্থানের পানি ব্যবহার নিষিদ্ধ করা ।
25. খাবার পানির জন্য সংরক্ষিত কুপ,পুকুর বা পানি সরবরাহের অন্যান্য স্থানে বা নিকটবর্তীস্থানে গোসল কাপড় কাচাঁ বা পশু গোসল করানো নিষিদ্ধ করা ।
26. পুকুর বা পানি সরবরাহের অন্যান্য স্থানে বা নিকটবর্তী স্থানে শন,পাট বা অন্যান্য গাছ ভিজানো নিষিদ্ধ করা ।
27. আবাসিক এলাকার মধ্যে চামড়া রং করা বা পাকা করা নিষিদ্ধ বা নিয়ন্ত্রণ করা ।
28. আবাসএলাকার মাটি খনন করিয়া পাথর বা আন্যান্য বস্তু উত্তোলন নিষিদ্ধ বা নিয়ন্ত্রণ করা ।
29. আবাসিক এলাকায় ইট,মাটির পাত্র বা অন্যান্য ভাটি নির্মাণ নিষিদ্ধ করা ।
30. শিলাবৃষ্টিসহ ঝড় ভূমিকম্প বা অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় তৎপরতা গ্রহন ও সরকারকে সার্বক্ষণিক  সহায়তা প্রদান ।
31. বিধবা, এতিম, গরীব ও দুঃস্থ ব্যক্তিদের তালিকা সংরক্ষন ওসাহায্য করা ।
32. সমবায় আন্দোলন ওগ্রামীণ শিল্পোর উন্নয়ন ও উৎসাহ প্রদান ।
33. বাড়তি খাদ্য উৎপাদনের ব্যবস্থা গ্রহণ ।
34. গবাদিপশুর খোয়াড় নিয়ন্ত্রণ ও রক্ষণাবেক্ষণের ব্যবস্থা করা ।
35. প্রাথমিক চিকিৎসা  কেন্দ্রের ব্যবস্থা করা ।
36. ইউনিয়ন বাসিন্দাদের নিরাপত্তা,আরাম-আয়েশ বা সুযোগ সুবিধার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ ।
37. ই-গভর্ণেন্স চালু  ও উঁৎসাহিতকরণ ।
38. ইউনিয়ন পরিষদের মত সদৃশ কাজে নিয়োজিত অন্যাণ্য সংস্থার সাথে সহযোগিতা সম্প্রসারণ ।

 >

সরকার কর্তৃক সময়ে সময়ে আরোপিত দায়িত্ববলী:

তবে স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন ২০০৯ প্রনয়নের পূর্বে ইউনিয়ন পরিষদ মূলত স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ)অধ্যাদেশ,১৯৮৩ অনুযায়ী পরিচালিত হত।স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) অধ্যাদেশ, ১৯৮৩ এর ৩০,৩১,৩২,ও ৩৩ ধারায় ইউনিয়ন পরিষদের কার্যাবলী উল্লেখ রয়েছে,যার বিস্তারিত বিবরন নিম্নে প্রদান করা হল।
স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) অধ্যাদেশ ,১৯৮৩ এর ৩০,৩১,৩২, ও ৩৩ ধারায় ইউনিয়ন পরিষদের কার্যাবলী মূলত পাঁচভাগে বিভক্ত যথাঃ১। পৌর কাযার্বলী ২। পুলিশ ও নিরাপত্তা ৩। রাজস্ব ও প্রশাসন, ৪। উন্নয়ন ও দারিদ্র দূরীকরণ এবং ৫। বিচার । উপরোক্ত কার্যাবলী নিম্নে আলোচনা করা হলো।

 

পৌর কাযার্বলী :

স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) অধ্যাদেশ ১৯৮৩ এর ৩০ ধারায় পৌর কার্যাবলী বর্ণনা করা হয়েছৈ। পৌর কার্যাবলী ২ ভাগে বিভক্ত যথা – ০১. বাধ্যতামূলক এবং ০২. ঐচ্ছিক।  তবে বাধ্যতামূলক ও ঐচ্ছিক কার্যাবলী ছাড়াও সরকার সকল বা নির্দিষ্ট কোন ইউনিয়ন পরিষদকে পৃথক কোন দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দিতে পারে ।
এছাড়া প্রচলিত অন্য কোন আইনের মাধ্যমে সরকার ইউনিয়ন পরিষদকে দায়িত্ব দিতে পারে। ইউনিয়ন পরিষদকে ১০টি বাধ্যতামূলক এবং ৩৮ ঐচ্ছিক দায়িত্বাবলী দেয়া হয়েছে।

 

বাধ্যতামূলক কাযার্বলী :
আইন  শৃংখলা রক্ষা করা এবং এ বিষয়ে প্রশাসনকে সহায়তা করা ;
অপরাধ,বিশৃংখলা এবং চোরাচালান দমনার্থে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহন করা ;
কৃষি,বৃক্ষরোপণ,মৎ্স ও পশু পালন, স্বাস্থ্য , কুটির শিল্প, সেচ যোগাযোগ;
পরিবার পরিকল্পনা কার্যক্রমের প্রসার ঘটানো;
স্থানীয় সম্পদের উন্নয়ন ঘটানো এবং তার ব্যবহার নিশ্চিত করা ;
জনগনের সম্পত্তি যথা-রাস্তা ,ব্রীজ,কালভার্ট,বাধ,খাল,টেলিফোন,বিদ্যুৎ ইত্যাদি সংরক্ষণ করা;
ইউনিয়ন পযার্য়ে অন্যান্য সংস্থার উন্নয়ন কার্যাবলী পর্যালোচনা করা এবং প্রয়োজনে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট এ বিষয়ে সুপারিশ করা;
স্বাস্থ্য সম্মত পায়খানা ব্যবহারে জনগণকে উৎসাহ প্রদান করা;
জন্ম-মৃত্যু, অন্ধ, ভিক্ষুক ও দুঃস্থদের নিবন্ধন করা;
সব ধরনের শুমারী পরিচালনা করা।

 

ঐচ্ছিক কার্যাবলী:
ইউনিয়ন পরিষদ (স্থানীয় সরকার)অধ্যাদেশ ১৯৮৩ এর প্রথম তপসিলে প্রথম খন্ডে ঐচ্ছিক কার্যাবলী উল্লেখ করা হয়েছ। বিধি বা সময় সময় সরকারের নির্দেশ অনুযায়ী এবং আর্থিক সংগতি অনুযায়ী ইউনিয়ন পরিষদ সকল বা যে কোন কার্য সম্পাদন করতে পারে। ঐচ্ছিক কার্যাবলী হচ্ছেঃ
জনপথ ও রাজপথের ব্যবস্থা  ও রক্ষাণাবেক্ষণ;
সরকারী স্থান, উন্মুক্ত জায়গা ও খেলার মাঠ এর ব্যবস্থা ও রক্ষাণাবেক্ষণ;
জনপথ রাজপথ ও সরকারী স্থানে আলো  জ্বালানো;
সাধারণভাবে গাছ লাগানো  ও সংরক্ষন এবং বিশেষভাবে জনপথ,রাজপথ ও সরকারী জায়গায় গাছ লাগানো ও সংরক্ষন ;
কবরস্থান,শ্মশান,জনসাধারণের সভার স্থান ও অন্যান্য সরকারি সম্পত্তির রক্ষনাবেক্ষণ ও পরিচালনা;
পর্যটকদের থাকার ব্যবস্থা ও তা সংরক্ষন করা;
জনপথ, রাজপথ ও সরকারি স্থানে অনধিকার প্রবেশ রোধ;
ইউনিয়নের পরিচ্ছন্নতার জন্য নদী বন ইত্যাদির তত্ত্বাবধান,স্বাস্থ্যকর ব্যবস্থার উৎকর্ষ সা্ধন এবং অন্যান্য ব্যবস্থা গ্রহণ;
গোবর ও রাস্তার আর্বজনা সংগ্রহ,অপসারণ ও ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা।
অপরাধমূলক ও বিপজ্জনক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ।
মৃত পশুর দেহ অপসারণ ও নিয়ন্ত্রণ ।
পশু জবাই নিয়ন্ত্রণ;
ইউনিয়নে নতুন বাড়ি ,দালান নির্মাণ পুনঃনির্মাণ নিয়ন্ত্রন;
বিপজ্জনক দালান নিয়ন্ত্রণ ।
কুয়া,পানি তোলার কল,জলাধার,পুকুর,এবং পানি সরবরাহের অন্যান্য উৎসের ব্যবস্থাপনা ও সংরক্ষণ।
খাবার পানির উৎসের দূষণ রোধের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ;
জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর সন্দেহযুক্ত কূপ,পুকুর বা পানি সরবরাহের অন্যান্য স্থানের পানি ব্যবহার নিষিদ্ধ করা।
খাবার পানির জন্য সংরক্ষিত কুপ,পুকুর বা পানি সরবরাহের অন্যান্য স্থানে বা নিকটবর্তীস্থানে গোসল কাপড় কাচাঁ বা পশু গোসল করানো নিষিদ্ধ করা।
পুকুর বা পানি সরবরাহের অন্যান্য স্থানে বা নিকটবর্তী স্থানে শন,পাট বা অন্যান্য গাছ ভিজানো নিষিদ্ধ করা।
আবাসিক এলাকার মধ্যে চামড়া রং করা বা পাকা করা নিষিদ্ধ বা নিয়ন্ত্রণ করা ।
আবাসিক এলাকার মাটি খনন করিয়া পাথর বা আন্যান্য বস্তু উত্তোলন নিষিদ্ধ বা নিয়ন্ত্রণ করা।
আবাসিক এলাকায় ইট,মাটির পাত্র বা অন্যান্য ভাটি নির্মাণ নিষিদ্ধ করা।
গৃহপালিত পশু বা অন্যান্য পশু বিক্রয়ের তালিকাভুক্তি করণ;
মেলা ও প্রদর্শনীর আয়োজন ;
জনসাধারনের উৎসব পালন’
অগ্নি,বন্যা,শিলাবৃষ্টিসহ ঝড় ভূমিকম্প বা অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় তৎপরতা গ্রহন ও সরকারকে সার্বক্ষণিক সহায়তা প্রদান ।
বিধবা ,এতিম,গরীব ও দুঃস্থ ব্যক্তিদের তালিকা সংরক্ষন ও সাহায্য করন ।
খেলাধুলার উন্নতি সাধন;
শিল্প ও সামাজিক উন্নয়ন সমবায় আন্দোলন ও গ্রামীণ শিল্পের উন্নয়ন সাধন ও উৎসাহ দান;
বাড়তি খাদ্য উৎপাদনের ব্যবস্থা গ্রহণ।
গবাদি পশুর খোয়াড় নিয়ন্ত্রণ ও রক্ষণাবেক্ষণের ব্যবস্থা করন ।
প্রাথমিক চিকিৎসা  কেন্দ্রের ব্যবস্থা করা ।
গ্রন্থাগার ও পাঠাগারের ব্যবস্থাকরণ;
ইউনিয়ন পরিষদের মত সদৃশ্য কাজে নিয়োজিত অন্যান্য সংস্থার সাথে সহযোগিতা ;
জেলা প্রশাসকের নির্দেশক্রমে শিক্ষার উন্নয়নে সাহায্যকরণ;
ইউনিয়নের বাসিন্দা বা পরিদর্শনকারীদের নিরাপত্ত,আরাম আয়েস বা সুযোগ সুবিধার জন্য প্রয়োজনীয় অন্যান্য ব্যবস্থা গ্রহণ;
ইউনিয়ন পরিষদের উপর ন্যস্ত পৌর ও উন্নয়ন কাযার্বলীর আওতায় সামাজিক অর্থনৈতিক ও উন্নয়নমূলক কাজের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এ দায়িত্ব গুলো চার ভাগে বিভক্ত যথাঃ
ক) যোগাযোগ
খ) শিক্ষা,কৃষি,স্বাস্থ্য ওপরিবার কল্যাণ;
গ) পানীয় জল সরবরাহ ;
ঘ) সংস্কৃতি ও সমাজ কল্যাণ।
 
ক) যোগাযোগ :
       গ্রামাঞ্চালের যোগাযোগ ব্যবস্থা অত্যন্ত অনগ্রসর। এ জন্য গ্রাম পর্যায়ে রাস্তা ঘাটের উন্নয়ন ইউনিয়ন পরিষদের দায়িত্ব। গ্রামে  চলাচলের ও্ উৎপন্ন দ্রব্যাদি হাটে বাজারে নেয়ার সুবির্ধাথে ইউনিয়ন পরিষদ রাস্তা ,পুল ,কালর্ভাট নিমার্ণ ও সংরক্ষন করবে ।এতে গ্রামঞ্চলে চলাচলের ব্যবস্থা উন্নতি হবে, উৎপন্ন ফসল বা দ্রব্যাদির  পরিবহন খরচ কমবে এবং তা বাজারজাত করার সুযোগ সৃষ্টি হবে।

খ) শিক্ষা,কৃষি,স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ :
গ্রামবাসীদের শিক্ষার স্তর এখনো অতি নিম্ন। শিক্ষার অভাবহেতু বিভিন্ন রকমের কুসংস্কার আছে আমাদের গ্রামীণ সমাজে। এসব কুসংস্কারের অভিশাপ থেকে জনগনকে রক্ষা করার উপায় হলু ব্যপক শিক্ষার বিস্তার । এ ব্যাপারে গ্রামের প্রাথমিক  বিদ্যালয়ের পরিচালনায় উৎকর্ষ সাধন,স্কুলে যাওয়ার উপযুক্ত ছেলে মেয়েদেরকে স্কুলে যাওয়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করা এবং সরকারের বিভিন্ন শিক্ষা কার্যক্রম বাস্তবায়নে অর্পিত দায়িত্ববলী ইউনিয়ন পরিষদ পালন করবে।
খাদ্য ঘাটতি আমাদের দৈনন্দিন সমস্যা। এর কারণ একদিকে যেমন জনসংখ্যা অপ্রতিহত গতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে অন্যদিকে সে অনুপাতে অতিরিক্ত খাদ্যদ্রব্য উৎপাদিত হচ্ছে না বরং জমির পরিমাণ হ্রাস পাচ্ছে ।এ প্রেক্ষিতে ইউনিয়ন পরিষদ বাস্তব জরীপের ভিত্তিতে কৃষি উন্নয়ন ও খাদ্যশস্য উৎপাদন এবং অধীক জমি চাষাবাদে আনা সহ চাষাধীন জমিতে অতিরিক্ত ফসল উৎপাদনের পরিকল্পা ও কার্যক্রম তৈরী এবং বাস্তবায়নের জন্য সক্রিয় ভুমিকা পালন করবে। প্রত্যেক বছরের প্রথম ফসল ওয়ারী সার ও বীজের চাহিদা তৈরী করে ইউনিয়ন পরিষদ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার নিকট প্রেরণ করবে।কৃষকরা যাতে সার ও উন্নত জাতের বীজ ও পোকা মাকড় ধ্বংসী ঔষধ ব্যবহার করেন ইউনিয়ন পরিষদ সে প্রেক্ষিতে কর্মসূচী অবলম্বন বা গ্রহন করবে। এছাড়া ইউনিয়ন পর্যায়ে ব্লক সুপারভাইজারদের মাধ্যমে প্রদর্শনী খামার স্থাপন করবে।
ইউনিয়ন পরিষদ গবাদি পশু ও হাস মুরগি পালন এবং মৎস্য চাষের জন্য জনসাধারনকে উৎসাহিত করবে। প্রয়োজনবোধে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারদের সাথে যোগাযোগ করে জনসাধারন যাতে পশু ও হাস মুরগির ঔষধ ও টিকা ,মৎস্য বীজ,মৎস্য চাষের যন্ত্রপাতি সংগ্রহ করেত পারে তার ব্যবস্থা করবে।
গ্রামের পরিচ্ছন্নতা বিধান,ময়লা অপসারণ,পরিবেশকে সুন্দর রাখা,প্রাথমিক চিকিৎসা সেবার ব্যবস্থা ইত্যাদি দায়িত্ব ইউনিয়ন পরিষদের উপর অর্পিত হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদের কর্তব্য আর্বজনা ও জংগল অপসারণ,কচুরীপানা উচ্ছেদ এবং পরিবেশকে মনোরম ও পরিছন্ন রাখা । কোন মহামারীর আশংকা দেখা দিলে স্বাস্থ্য বিভাগের সাথে যোগাযোগ করে প্রতিরোধের ব্যবস্থা করা।

গ)পানীয় জল সরবরাহ 
যদিও নদীমার্তৃক আমাদের বাংলাদেশ তবুও গ্রামঞ্চলে বিশেষতঃ খরার মৌসুমে বিশুদ্ধ পানীয় জলের অভার তীব্র আকার ধারণ করে। বিশুদ্ধ পানীয় জলের ব্যবস্থা করা ইউনিয়ন পরিষদের একটি অন্যতম দায়িত্ব। এ প্রেক্ষিতে ইউনিয়ন পরিষদ কূয়া,পুকুর ইন্দ্ররা ইত্যাদি খনন পুনঃখনন ও সংরক্ষন করতে পারে। এবং এ সবের পানি যাতে অন্যান্য ব্যবহার দ্বারা দূষিত না হয় তার ব্যবস্থা করা। বিশুদ্ধ পানীয় জল সুলভ করার উদ্দ্যেশ্যে সরকার গ্রামে নলকূপ বসানোর কর্মসূচি গ্রহন করেছেন। সুবিধাজনক স্থানে নলকূপ বসানো ও রক্ষনাবেক্ষণের ব্যাপারে ইউনিয়ন পরিষদ গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করবে।

ঘ)সংস্কৃতি ও সমাজ কল্যান
উন্নয়নমূলক কার্যক্রম ছাড়াও ইউনিয়ন পরিষদকে বিবিধ সাংস্কৃতিক ও সমাজকল্যাণমূলক দায়িত্ব দেয়া হয়েছ। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে পাঠাগার স্থাপন। মানসিক বিকাশের জন্য পাঠ্য পুস্তক ছাড়াও পত্র পত্রিকা এবং বিভিন্ন ধরণের বইয়ের বিশেষ প্রয়োজন। এছাড়া বয়স্কদের জন্য নৈশ বিদ্যালয় চালু করা,চিত্ত বিনোদনের জন্য ইউনিয়ন পরিষদকে জাতীয় উৎসবের দিনগুলো উদযাপন,মেলা প্রদর্শনীর আয়োজন খেলাধুলা ও ক্রীড়ি প্রতিযোগীতার অনুষ্ঠান,মাঠ ও উদ্যানের ব্যবস্থা ইত্যাদির দায়িত্ব ইউনিয়ন পরিষদকে দেয়া হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদের কিছু সমাজকল্যাণ মূলক কর্তব্য রয়েছে যেমন- কবরস্থান ও শ্মশানঘাট রক্ষনাবেক্ষন এবং বিধবা অনাথ ও দরিদ্র ব্যক্তিদের সাহায্য করা। ইউনিয়ন পর্যায়ে সরকার কর্তৃক গৃহীত সমাজকল্যাণমূলক কাজে ইউনিয়ন পরিষদ অর্পিত দায়িত্ববলী পালন করবে। মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর সমাজ সেবা অধিদপ্তর এবং পল্লী উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক গৃহীত কর্মসূচীতে জনগণকে উদ্বুদ্ধ এবং বাস্তবায়নের জন্য সহযোগিতা করবে।

পুলিশ ও নিরাপত্তা
গ্রামঞ্চলের জনসাধারণ ও তাদের মালামালের নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা ইউনিয়ন পরিষদের অন্যতম দায়িত্ব ।এ দায়িত্ব  পালনের জন্য প্রতিট ইউনিয়ন পরিষদ মহল্লাদার ও দফাদার নিয়োগ করেছে । মহল্লাদার ও দফাদারদের কাজ হচ্ছে ইউনিয়নের গ্রাম ও মহল্লায় প্রহরার ব্যবস্থা করা এবং পুলিশকে অপরাধ দমনে যথাসাধ্য সাহায্য করা । সন্দেহ জনক কোন ব্যক্তি বা কোন কারণে ইউনিয়নে শান্তি বিঘ্নিত হতে পারে এমন কোন পরিস্থিতির উদ্ভব হলে সে সম্বন্ধে থানার ওসিকে মহল্লাদার ও দফাদার অবহিত করবে এবং ১৫ দিনে অন্ততঃ একবার তার কাছে রিপোর্ট করবে।ইউনিয়নের কোন প্রকার মহামারীর আশংকা দেখা দিলে বা কোন বাধ বা সেচ প্রকল্পের কোন ক্ষতির সম্ভাবনা হলে বা ইউনিয়ন পরিষদের কোন সম্পত্তি অন্যায় দখল হলে,ইউনিয়ন পরিষদকে তা তখনই জানাতে হবে। তাছাড়া রেললাইন, টেলিফোন বা টেলিগ্রাম বা ইলেকট্রিক লাইন,টিউবওয়েল এবং অন্যান্য সরকারী সম্পত্তি ক্ষতির সম্মূখীন হলে জনসাধারণ বা মহল্লাদার ও দফাদার ইউনিয়ন পরিষদকে জানাবে ।তদঅনুযায়ী ইউনিয়ন পরিষদ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানাবে।কিছু কিছু ক্ষেত্রে মহল্লাদার  ও দফাদাররা  ম্যাজিস্ট্রেটের হুকুম ও ওয়ারেন্ট ছাড়াই গ্রেফতার করতে পারে যেমন–কেউ যদি কোন আদালত অগ্রাহ্য অপরাধ করে,বা কারো কাছে কোন সিদেল যন্ত্র বা চোরাই মাল থাকে বা কেউ হাজত থেকে পালিয়ে গ্রামে আত্মগোপন করে ইত্যাদি। কিন্তু তাদেরকে যতশীঘ্র সম্ভব থানায় সোপর্দ করতে হবে। এছাড়া মহল্লাদার এর আরেকটি অন্যতম প্রধান কাজ হচ্ছে জন্ম ও মৃত্যু রেজিস্টারে লিপিবদ্ধ করা ।

রাজস্ব ও প্রশাসন  
নিজস্ব দায়িত্ব সম্পাদন ছাড়াও ইউনিয়ন পরিষদঃ
রাজস্ব ও সাধারণ প্রশাসন কাজে সহায়তা করবে;
রাজস্ব অথবা ভূমি উন্নয়ন কর আদায়ে রাজস্ব কর্মকর্তা এবং সাধারণ প্রশাসনকে সহায়তা করবে । জেলা প্রশাসকের নির্দেশ অনুযায়ী ইউনিয়ন রাজস্ব ও প্রশাসন পরিচালনা,রাজস্ব আদায়ের রেকর্ড ও মূল্যায়ন তালিকা প্রণয়ন,সার্ভে বা শস্য পরিদর্শনে সহায়তা করবে;
কোন আপরাধ সংগঠিত হলে পুলিশকে অবহিত করবে। জনসম্মূখে পুলিশকে কুখ্যাত চরিত্রের ব্যক্তি সম্পর্কে অবহিত করবেন এবং তদন্ত কাজে,অপরাধ দমনে এবং অপরাধীকে গ্রেফতার করেত সহায়তা করবে;
জনপথ,রাস্তা বা জনসাধারণের জায়গায় অবৈধ দখল অথবা দালান বা সম্পত্তির ক্ষতি হলে যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট রিপোর্ট করবে;
সরকার অথবা অন্য কোন উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের পক্ষে নির্দেশ অনুযায়ী জনসাধারণকে বিঞ্জপ্তির মাধ্যমে যে সকল বিষয় অবহিত করার নির্দেশ দেয়া হয় তা বিঞ্জপ্তির মাধ্যমে  অবহিত করবে এবং
কর্মকর্তাদেরকে তাদের কাজে সহায়তা করবে এবং উক্ত কর্মকর্তাগণের চাহিদা অনুযায়ী তথ্যাদি সরবরাহ করবে।
 
উন্নয়ন ও দারিদ্র দূরীকরণ
 
গ্রাম উন্নয়নের কেন্দ্র বিন্দু হচ্ছে ইউনিয়ন পরিষদ । কৃষি ও কুটির শিল্পের উন্নতি ও সমবায় আন্দোলানের বিস্তার এবং বন, পশু ও মৎস্য সম্পদ বৃদ্ধির জন্য ইউনিয়ন পরিষদ উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহন করতে পারে। ইউনিয়ন পরিষদকে উন্নয়ন পরিকল্পনা এমনভাবে তৈরী করতে হবে যাতে একে যেসব দায়িত্ব দেয়া হয়ছে যেমন-কৃষি,শিক্ষা,যোগাযোগ,স্বাস্থ্যকুটির শিল্প ইত্যাদি বিষয়ক প্রকল্প গ্রলো পৃথক পৃথক ভাবে দেখানো হয়।নিম্নলিখিত তথ্যাদি উন্নয়ন পরিকল্পনায় লিপিবদ্ধ করতে হবে।
বিভিন্ন সেক্টরে লক্ষ্য মাত্রা ;
প্লানের নিদিষ্ট প্রকল্পসমূহ;
কি ধরণের কর্মচারী প্রয়োজন হবে এবং এ ব্যাপারে সরকারের কাছ থেকে কোন সাহায্যের প্রয়োজন হবে কিনা;
যে সকল দ্রব্যাদি এবং সরঞ্জামের প্রয়োজন হবে;
কি পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন হবে এবং কিভাবে তা পাওয়া যাবে ;
জনসাধারণের কাছ থেকে প্রাপ্ত চাদা, দ্রব্যাদি ও স্বেচ্ছাশ্রম;
কিভাবে বার্ষিক পরিকল্পনা পযার্য়ক্রমে বাস্তবায়িত হবে;
কোন প্রকল্প সমাপ্ত হলে তার সংরক্ষনের ব্যবস্থা ও আবর্তক খরচ ।
প্রত্যেক ইউনিয়ন পরিষদকে বিভিন্ন এলাকার চাহিদা  ও প্রয়াজনীয়তা অনুযায়ী একটি উন্নয়ন পরিকল্পনা তৈরী করতে হবে। বিভিন্ন এলাকার উন্নয়ণমূলক কাজের চাহিদা একসংগে বা এক বছরে মেটানো সম্ভব নয়,পরিষদের আর্থিক সংগতি ও পর্যাপ্ত নয়। এসব কারণে পরিকল্পনা প্রণয়নের সময় দেখতে হবে বৃহত্তর জনস্বার্থে এবং পরিষদের আর্থিক সংগতির দিকে লক্ষ্য রেখে কোন ধরণের প্রকল্প বা প্রকল্পগুলো প্রথম বছর,কোন গুলো দ্বিতীয় বছর, কোন গুলো তৃতীয়, চতুর্থ এবং পঞ্চম বছরে কার্যকরী করা সম্ভব হবে অথাৎ এক কথায় বিভিন্ন ধরণের প্রকল্পগুলোর সামগ্রিক অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে পাঁচশালা পরিকল্পনা তৈরী করতে হবে। প্রতি বছর উন্নয়ন পরিকল্পনা খাতে যে পরিমান অর্থ বরাদ্দ করা হবে তা পাঁচশালা পরিকল্পনার ভিত্তিতে খরচ করতে হবে অন্য ভাবে নয়।

 

বিচার
আমাদের দেশের দরিদ্র জনসাধারণের অধিকাংশই গ্রামে বাস করে্ । এ দরিদ্র জনসাধারণের পক্ষে শহরে গিয়ে র্দীঘদিন মামলা মোকাদ্দমা চালানো অতন্ত্য কঠিন ব্যাপার। সুতরাং তাদেরকে ঝগড়া বিবাদের মীমাংসা ও মা্মলা মোকাদ্দমা নিস্পত্তি এবং বিড়ম্বনা ও এ সংক্রান্ত্র খরচের হাত থেকে অব্যহতি দেয়ার জন্য সরকার গ্রামাঞ্চলে প্রাথমিক ভাবে বিচার ব্যবস্থার দায়িত্ব ইউনিয়ন পরিষদের উপর ন্যস্ত করেছেন। ইউনিয়ন পরিষদ গ্রাম আদালত গঠনের মাধ্যমে কতিপয় ফৌজদারী ও দেওয়ানী উভয় প্রকার মামলার বিচার করতে পারে।
                                     —————————————সমাপ্ত—————————————